বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০

ভাঙ্গনের ভয়ঙ্কর আবহে

 ভাঙ্গনের ভয়ঙ্কর আবহে 

নিধুভূষণ দাস



আর কতদিন দূরে দূরে থাকা

আর কত‌ সমাজ থেকে আলগা

হওয়া, শারীরিক বন্ধন মুছে ফেলা

আবেগের আবেদন অস্বীকার করা

এই নিষ্ঠুর সময়ে মানসিক দূরত্ব

গড়ে তুলে সমাজটাই ভেঙ্গে দেওয়া?


সমাজ নেই তো ভালবাসা নেই

ভালবাসা নেই তো আবেগ নেই

আবেগ নেই তো হৃদয় নেই

হৃদয় নেই তো অশ্রু নেই

অশ্রু নেই তো জীবন নেই।


তাহলে কি ভাব নয়, বিজ্ঞান

মানুষ নয়,রোবট,বোধ নয়

কৃত্রিম বুদ্ধিই ভবিতব্য তোমার

হে নিয়েনডার্থেলের উত্তরসূরী!


আশ্বিনে চলছে শ্রাবনের ধারা

মেঘে ঢাকা আকাশে গর্জন-

এই বুঝি জীবনের ভাষা

আবেগী মন নিয়ে বেঁচে থাকার

অবলম্বন এই করোনা-সময়ে

ভাঙ্গনের ভয়ঙ্কর আবহে !


শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০

সভ্যতা উপদেশ দিতে জানে

 সভ্যতা উপদেশ দিতে জানে

নিধুভূষণ দাস


"ও দাদা ধরুন না একটু,ও দাদা

আপনার তো মুখে মাস্ক আছে,

ধরুন না একটু! আমি একা‌ পারি?"


হে অসাহায় রমনী, জানেন না বুঝি?

মানুষের মুখে মাস্ক থাকে বরাবরই-

ধূর্ততা ঢাকতে মাস্ক পরতেই হয়।


তিলোত্তমা কলকাতার খুব কাছে

 এক হাসপাতাল চত্বরে সেদিন

 কোনো এক কোভিড রোগীর

স্ত্রীর এই আকুল ডাকে সাড়া মেলেনি।


তবে অযাচিত উপদেশ মিলেছে:" উঠে

পড়ুন কাকা,উঠতে পরলেই বেঁচে

যাবেন",স্ত্রী হাত ধরে প্রাণপন

টানছিলেন,তিনি উঠতে পারেননি।


নিজের পায়ে‌ দাঁড়াতে না পারলে

অন্যের উপদেশে ‌ বাঁচা যায়না,

এটাই সভ্যতার প্রথম পাঠ

সভ্যতাগর্বী বাংলায়;দ্বিতীয় পাঠ:

সভ্যতার সঙ্গে মানবতার কোনো

সম্পর্ক নেই,সভ্যতার মূল অর্থ

 আত্মস্বার্থ সংরক্ষণ,মগুজে 

শ্রেষ্ঠ প্রাণী ধূর্ততায় বাঁচে মরে।


কোভিড তো এই সভ্যতারই দান,

প্রক‌তির বিরুদ্ধে লোভাতুর মানুষের

 জেহাদের অনিবার্য ফল।



এখন বুঝবেন স্বামী-হারানো

অসহায় স্ত্রী,তাকে‌ বাঁচতে হবে

নিজের জোরে, হৃদয়বান বন্য

 কিংবা উদাসীন সাধুর‌ মতো।

 

সোমবার, ৮ জুন, ২০২০

মানুষের চেয়ে বড় অমানুষ

মানুষের চেয়ে
 বড় অমানুষ
 নিধুভূষণ দাস

গণতন্ত্র আবারও হেরে গেল লিঙ্কনের দেশে
ধর্মনিরপেক্ষতা বিপর্যস্ত বঙ্গবন্ধুর বাংলায়
বর্ণবিদ্বেষ আর সম্প্রদায় বিদ্বেষের ‌এই পৃথিবীতে নিরাপদ নয় ফ্লয়েড, নিখিল।

আমি শ্বাস নিতে পরছি না… ছিনা….না.. আ
রুদ্ধ শ্বাসে বলছিল কৃষ্ঞাঙ্গ ফ্লয়েড
স্বেতাঙ্গ‌ পুলিশের হাঁটু চাপা দেয় তার কন্ঠ।
মহামতি লিঙ্কন,দেখে যান আপনার দেশে
এখনও বর্ণবিদ্বেষ কতটা‌ প্রকট।

 কৃষক নিখিল তালুকদার অবসরে তাস
খেলছিল,এই তার অপরাধ!
প্রিয় বঙ্গবন্ধু,এও সম্ভব আপনার দেশে,
আপনার গোপালগঞ্জে - নিখিল খুন হলো পুলিশের হাতে‌! হে বঙ্গবন্ধু কন্যা, আপনার নির্বাচনী কেন্দ্রে নিখিলের জীবনের অধিকার
ভূলুন্ঠিত হলো আপনারই পুলিশের হাতে।

গণতন্ত্র কেনো,কোনো তন্ত্রেই নিরাপদ নয়
ক্ষমতাহীন সাধারণ মানুষ, রাজপথে
পুলিশের গুন্ডামি, রাজনীতিতে প্রবল ভন্ডামি
কেড়ে নেয় নিরীহ মানুষের মৌলিক অধিকার।

আজ মানুষের চেয়ে বড় অমানুষ
মানবিকতা হার মানে রাজনীতির কাছে
মানবাধিকারের নামে দিব্যি চলে ধান্দবাজী
স্লোগানে চাপা পড়ে নির্যাতিতের কান্না
সংসদে চেঁচামেচিতে হেরে যায় সংবিধান।
একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে
 বিপন্ন ক্ষমতাহীনের মানবাধিকার।

কাঁদুন মহামতি লিঙ্কন, কাঁদুন!
আপনার গণতন্ত্রের ধারণা ওরা
অপ্রাসঙ্গিক করে দিচ্ছে আপনারই দেশে 
ফ্লয়েডকে ওরা জনগণের অংশ মানেনি।
আবার আসুন ফিরে হে ক্যাপ্টেইন
গেটিসবার্গে‌,মনে করিয়ে দিন:
গণতন্ত্র মানে জনগনের দ্বারা নির্বাচিত, জনগণের সরকার,ফ্লয়েডদের সরকার।

চোখের জলে প্রিয় পদ্মায় অকাল বন্যা
আনুন, অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু 
আপনার ধর্মনিরপেক্ষতা হার‌ মানছে ধর্মান্ধতার কাছে,সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে
ফিরে এসে বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করুন:
নিখিলহীন দেশ  আমার নয়, তোমারও না।

বেঁচে থাকুন লিঙ্কন, বেঁচে থাকুন বঙ্গবন্ধু
জাতির বিবেক হয়ে, মানবতার
অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে আমাদের মাঝে।