রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

করোনা মোকাবেলায় জনতা কার্ফিউ পালন

করোনা মোকাবেলায় জনতা কার্ফিউ পালন
নিধুভূষণ দাস

"The curfew tolls the knell of parting day,"

অষ্টাদশ শতাব্দীর ইংরেজ কবি টমাস গ্রে-র লেখা এবং ১৭৫১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বিখ্যাত কবিতা(Elegy Written in a Country Churchyard)-র প্রথম চরণ এটি।

রবিবার ২২ মার্চ আমরা ভারতবাসী সকাল-সন্ধ্যা জনতা কারফিউ পালন করলাম। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি কামড় বসিয়েছে। আমাদের দেশেও থাবা বসিয়েছে এই উপদ্রব।।এই মারণ ভাইরাসের মোকাবেলায় তথা সামাজিক/ব্যক্তিগত বিচ্ছিন্নতায় গিয়ে করোনা সংক্রমনের ধারা আটকে দেওয়ার এই জনতা কার্ফিউ ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর  আহবানে দেশবাসীর স্বেচ্ছা প্রয়াস।চিকিৎসক,নার্স তথা সর্বস্তরের স্বাস্থ্যকর্মী,পুলিশ ও দমকল কর্মী, সাফাইকর্মী ও সাংবাদিকগণ আমাদের জন্য।।।। এদিনও
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আমরা বিকেল পাঁচটায় হাততালি দিয়েছি,কাসর-ঘন্টা বাজিয়েছি, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে।

উক্ত কবিতায় কবি স্বীকৃতি-বঞ্চিত প্রকৃত নায়ক কৃষিশ্রমিক তথা শ্রমজীবী মানুষদের স্বীকৃতি দিয়েছেন এইভাবে:
"Full many a gem of purest ray serene,
The dark unfathom’d caves of ocean bear:
Full many a flow’r is born to blush unseen,
And waste its sweetness on the desert air."
আমরাও আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সহায়ক নায়কদের প্রতি কৃতজ্ঞতা  জানালাম।

কবিতাটির চার চরণের প্রথম স্তবকের বাকি তিনটি চরণ হলো:

"The lowing herd wind slowly o'er the lea,
The plowman homeward plods his weary way, And leaves the world to darkness and to me."

কবি দিনের শেষে সন্ধ্যা নেমে আসার কথা বলছেন এবং  ক্লান্ত কৃষিশ্রমিকদের ঘরে ফেরার বর্ণনা দিচ্ছেন।এই প্রসঙ্গে curfew কথাটির তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে।
curfew কথাটির বাংলা পরিভাষা সান্ধ্য আইন। প্রাচীন ফরাসী শব্দ cuevrefeu এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষের দিকের ইংরেজি-ফরাসি শব্দ coeverfu থেকে চতুর্দশ শতকের প্রথম দিকে ইংরেজি curfeu কথাটির আবির্ভাব যার আক্ষরিক অর্থ "সন্ধ্যাকালীন সংকেত,একটি নির্দিষ্ট সময়ে আগুন/আলো নেভানোর জন্য ঘন্টা বাজিয়ে সংকেত দেওয়া। এখন এর বুৎপত্তিগত অর্থ একটি নির্দিষ্ট সময়কালে,বিশেষত রাতে ঘরবন্দি থাকার সরকারি বিধান ও নির্দেশ।যেমন সন্ধ্যা-সকাল কর্ফিউ। জনতা কার্ফিউ পালনের নির্দেশ ছিলনা,ছিল আহ্বান।সান্ধ্য আইন জারি হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়।করোনার মোকাবেলা আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন নয়, মহামারি ঠেকানোর একটি রাষ্ট্রিক-নাগরিক আয়োজন যাতে যথার্থ সাড়া মিলেছে।কার্ফিউ কথাটি এই প্রসঙ্গে আলাদা তাৎপর্য পায়।এতে নির্দেশ নেই,প্রণোদনা আছে।আর তা পালিত হয়েছে  দিনের বেলায়,কর্মক্লান্ত দিনের শেষে নয়।