রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

মল্লিকা, শোন

 মল্লিকা, শোন

নিধুভূষণ দাস


মল্লিকা,শোন,কাঠমল্লিকা আমার কম

প্রিয় নয়।তোমরা গোলাপকে ফুলের 

রানী বল।ধানের আলে,পথের ধারে

অযত্ন লালিত লজ্জাবতী কম কিসে?


কেয়ার রূপ-গন্ধ রানীকে হার মানায়

বাঁশ ঝাড়ে আপন মনে ফুটে ওঠা 

খারকোন ফুল রানীর চেয়ে

অধিক লাল। তোমায় বলি,আমার

প্রিয় জলে-ভাসা শাপলা আর

কচুরিপানার ফুল। আহ্ ,কী অপরূপ!


তোমরা মজে আছো তাজমহলের রূপে

আমার প্রিয় জব্বলপুরের ভারসাম্য শিলা।

ভেদাঘাটে নর্মদা তীরের মার্বেল পাহাড়

দেখে এসো। আহ্,জোছনা রাতে স্নিগ্ধ

আলোয় কী অপরূপ জগন্ময়ের ভাস্কর্য!



মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১

যখন বয়স আটষট্টি

যখন বয়স আটষট্টি

নিধুভূষণ দাস

 

যখন বয়স আটষট্টি, ভাটিতে সাঁতার কাটি

শুরুতেই শেষ জানি, উজানে অনাগ্রহী

পুরুষের প্রেরণায় প্রকৃতির অন্বেষায় চলি

 

শৈশবে সামুদা বর্ষায় ডিঙ্গি ভাসাতো

 খালের ভাটিতে,চলে যেতাম আদিগন্ত

মাঠে,যেখানে হাসতো সাপলা,দুলতো 

আমনের গাঢ় সবুজ মাথা 

দেখতাম মাছেদের আনন্দ উচ্ছ্বাস

এই বুঝি অসীমে আনন্দমেলা!

 

হিমালয় থেকে নেমেছি দুর্জয় বেগে

ভেঙ্গেছি পাথরের বাধা

আমি তোমাদের কেউ নই

আমি পুরুষের ইচ্ছায় চলি

যদিও তোমরা বল আমি নদী

 

্আমি সাগরমুখি যাত্রী

তোমরা আমার গলা টিপে ধরো

আমি মানি না কোনো মানা

আমার চরে বসাও বসত

আমার পথে তৈরি কর বাঁধ

আমি চলি আপন মনে অন্য পথ বেঁধে

 

আমি ভাটিতে চলি,উজানে অনাগ্রহী

প্রকৃতির বিশালতায় লীন হবো বলে ছুটি

যখন আমি আটষট্টি, পুরুষ আমাকে

 নিয়ে যাচ্ছে সমাপ্তির আশ্রয়ে

যেখানে শুরু সেখানেই হারিয়ে যেতে

  

বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কলিঙ্গ জয়ে

 কলিঙ্গ জয়ে

নিধুভূষণ দাস


অনুরোধ অনুব্রত আর নয়

অর্থহীন আস্ফালন 

অনেক তো দেখলাম ঝড়ের তান্ডব!


যুদ্ধে জানি বিষাক্ত বিকিরণে ধ্বংস

হয় হিরোসিমা,রক্তের হোলি খেলায়

সম্রাটের কলিঙ্গ বিজয়,হারে জনগণ

মরনের কাছে পরাজিত হয় জীবন।


এবার না হয় ভাবি একবার 

কারো অভিষেকে প্রজার কি আসে যায়

রাজাই বা কতটা জনগণেশের কথা

ভাবতে পারেন রাজনীতির ব্যস্ততায়।


ভোট দেয় প্রজা,ভয়ে কিংবা ভালবাসায়

ভেবে দেন ক'জন কে জানে

আমাদের এই বৃহত্তম গণতন্ত্রে

জনগনের মূল্য কতটা কলিঙ্গ জয়ে?

শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১

অলীক স্বর্গে‌ ভাল আছি

 নিধুভূষণ দাস


কেমন আছো,তোমরা সবাই!

ভাল,খুব ভাল - ভাইরাসের সঙ্গে

যুদ্ধে, হিংসার সংসার থেকে পালিয়ে

আবার উদ্বাস্তু শিবিরে

ভাল আছি,ঢের ভাল।


এর‌ চেয়ে ভাল আর‌ কিছু

হয় না,শৈশব-কৈশোরের প্রিয় নদী,

জন্মস্থান ছেড়ে একদিন সঙ্গোপনে

স্বর্গ ভেবে শরণ নিয়েছিলাম যেথায়

সেইখানে বিপন্নবোধে তুমি সতত পড় মনে

প্রিয় সহচরী,আমার শীতলক্ষ্যা।


বিশ্বাস কর,ভাল নেই আমি

কানে কানে এই কথা তোমাকেই বলি

দেয়ালেরও কান‌ আছে‌ জানি।


ভাল নেই,এই কথা‌ তোমাকেই

বলতে পারি ফেলে আসা সহচরী।


ভাল থাকা সহজ নয়,ভাল রাখে

না কেউ, ভাল থাকতে হয়,

বলেছিলে তুমি যেদিন তোমাকে

ছেড়েছিলাম অলীক স্বর্গের হাতছানিতে।


সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২১

সুস্বাগতম দুহাজার একুশ

 সুস্বাগতম দুহাজার একুশ

নিধুভূষণ দাস


আমার অনেকটা আকাশ নিয়ে

গেলে জানি,এই-আছি-এই-নেই

জীবনে এখনেই নোঙর আমার

এও জানি,এখন পলকে তখন হয়ে যায়


এতদিনে  কতটা সময় ফেলে

এলাম উজানে, ‌ভাবি এই সংক্রান্তির

সকালে,স্মৃতির গুন টেনে উজানে

 যেতে পারি, কিন্তু ভাটার টান 

অস্বীকার করি কী করে?

মাঝির ভাটিয়ালি সুরে যে

বয়ে যায় বিরহের আকুলতা!


কেউ চলে গেলে,কেউ আসে

এইতো নিয়ম চিরদিন

প্রয়াণের মতো আগমন,

বিসর্জন ও আবাহন সমান সত্য


চলে যাবে তুমি প্রিয় শীত,আসিবে

নতুন‌ বসন্ত চলতি সহস্রাব্দের

নতুন একুশে, ফিরে আসবে তুমিও

নিয়ে আবার স্বাদু খেজুরের রস।

সুস্বাগতম দুহাজার একুশ!