মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

মাঘের দুপুরে কৌশিকী



মাঘের দুপুরে কৌশিকী 

নিধুভূষণ দাস 



মাঘের দুপুরে ডানদিকে ঘাড়  কাত করে
কৌশিকী  দেখছে নদিটিরে
মাঝখানে চড় ,দুই ফালি জলাশয়
মনে পড়ে  দেখেছে শৈশবে
স্টীমার যেতো,যেতো সার সার বজরা বর্মির হাটে
এখন শুধু চলে ডিঙ্গি শীতলক্ষায়।

মনে পড়ে,গায়ের পাশ দিয়ে এই নদি থেকে
গিয়েছিলো একটি খাল
বর্ষায় নদিটির মতোই যৌবনবতী হতো তা
মাঠ ভরিয়ে দিত জল আর  মাছে
আমন ধানের শীষ সোনা দিতো উপহার।

গায়ের মানুষ স্নান করতো ডালিমের রসের মতো জলে
সন্ধ্যার আগে গায়ের বধুরা কলসি কাঁখে
দল  বেঁধে ঘাট থেকে জল নিতো কলরবে।

 দুই পাড়ে এখন সার সার কারখানা
গ্রাম হয়েছে শিল্প-শহর ,পাতাবাহারের বেড়া
নেই,বাড়ি ঘিরে উঠেছে  ইটের দেয়াল।

নদি আজ হতযৌবনা,বিষাক্ত এর জল
ওড়নার আঁচলে চোখ মোছে কৌশিকী
টিউবওয়েলের জল দেয় বাবার শ্মশানে।


রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

কালনির্নয় পাঠ




কালনির্নয় পাঠ 

নিধুভূষণ দাস 


এখন কোন কাল ?
কী করে বলি ,বলোতো  দেখি !
কেনো মেঘ,বৃষ্টি ,শিশির ,কুয়াশা
দেখতে পাওনা বুঝি  ?
তোমার মতো মনের চশমা  আছে কোথায় আমার ,বলো।

পাখির কূজন ,ভোমরার গুঞ্জন,মাছির ভনভন
শুনতে কি পাওনা  একদম ?
হাঁ,কাক ডাকে শুনি প্রতিদিন।
সারা বছর থাকি মশারির নিচে
তাও নিতে হয় এন্কেফেলাইটিসের টিকা
ঋতু  কখন কোনটা ,কী করে বলবো বলো।

গরম কাপড় কি পরো না কোনোদিন ?
পরি,তবে ওটা  তো নিছক ফর্মাল ড্রেস
আর,শোনো, এখন মোষের শিং কাঁপেনা কোনদিন।

কৃষ্ণচূড়ায় কি ফোটেনা ফুল ?
ফোটে ,তবে তাতে আসেনা  যৌবন মনে
এসএমএস,ফেসবুকে ভালোবাসাবাসি
এই আছে,এই নেই।

বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫

রাত থাকুক রাতের মতো

রাত থাকুক রাতের মতো

নিধুভূষণ দাস 





আসছে রাত ,আসুক ,আসতে দাও
জ্বালিও না আলো ,শুধু জ্বলুক আকাশের তারা
আর  মাটির জোনাকি।

অনেক তো জ্বালালে বাতি
অমাবস্যায় করলে দীপাবলী
হলো কী  কল্যাণ তাতে পৃথিবীর ?

অন্ধকার রাতে আলোকিত প্রাসাদে
বসে কষলে  যুদ্ধের  ছক
যুদ্ধ শুরু হলে চালালে ব্ল্যাকআউট
কতটা আলোকিত হলো পৃথিবী ,বলো !

তারচে বরং আঁধারকে আঁধার থাকতে দাও
আঁধারে ভাবতে শিখি আলো কারে কয়
রাত থাকুক রাতের মতো,অনাবিল।