ভূতের গল্প (৫)
নিধুভূষণ দাস
হঠাত তার আবার আমার মেয়ের ব্যাপারে আগ্রহ কেনো ,এই ভেবে আমি একটু শঙ্কিত হলাম। ভাবলাম ,আসল কথা বলবোনা। ওকে বললাম ,অন্নু আমার মেয়ে নয়,একটি কল্পিত চরিত্র মাত্র ,আমার কোনো মেয়ে নেই। ওর মুখে একটা বাঁকা হাসি দেখলাম। বললো , ভাবছো যা বলবে তাই বিশ্বাস করবো ,তাই না ?আমি সব জানি। তোমার মেয়ের বয়স ১৪,সে ক্লাস টেন -এ পড়ে ,সেন্ট যোসেফ স্কুলে। খুব ভালো মেয়ে ,অনেক বড় হবে ,স্কলারশিপ নিয়ে অক্সফোর্ড -এ চলে যাবে পড়াশোনা করতে। তুমি ওকে চিনতেই পারোনি ,সম্ভব-ও নয় তোমার মতো সংকীর্ণ মনের মানুষের পক্ষে।
তার কথা শুনে আমি তো হতভম্ব ! সে এতসব জানলো কী করে ,ভেবে পাচ্ছিনা । অন্নুর কুষ্ঠিতে তো লেখা আছে ও বিদেশে পড়তে যাবে ,বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হবে ,পরে নাসায় বড় গবেষক হবে। আমি উপায়ান্তর না দেখে তার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। বললাম ,ক্ষমা কারো ,আমি বুঝতে পারিনি। আবার হাসলো সে। আমি বললাম ,তুমি তো দেখছি সব জানো ,প্লীজ বলবে আমার আগামী দিনগুলি কেমন যাবে ?ও বললো ,সেটা জানি কিন্তু বলবোনা ,তাতে তোমার ক্ষতি হবে। কি ক্ষতি হবে ? সে বললো ,ভালো বললে তুমি আত্মতুষ্টিতে ভুগবে ,খারাপ বললে হতাশায় আছন্ন হবে। বরং কর্তব্য পালন করে যাও ,তাতেই ফল মিলবে। আসলে তুমি নিজেকেও চিনতে পারোনি এতদিনে। যে নিজেকে চেনেনা ,সে অন্যকে চিনবে কী করে। উদার হওয়ার চেষ্টা করো ,দেখবে অনেক কিছু নিজেই বুঝতে পারবে।
ও মিথ্যে বলেনি এক বিন্দুও।উদারতা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ ,সংকীর্ণতা আমার উত্তরাধিকার। জানতে চাইলাম, কীভাবে উদার হওয়া যায়। ও বললো, চেষ্টা করো,অনুশীলন করো ,উদার মানুষদের অনুকরণ করো ,দেখবে হয়ে যাবে। আমি তো উদার কে তাই জানিনা ,সবাইকে আমার মতোই মনে হয়। আমার এই আত্মোপলব্ধি বুঝতে পেরে সে বললো, নিজেকে বুঝতে পারলেই উদার হতে পারবে। শোনো, তোমাদের ওই দিল্লিতে কে একজন কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ,ওকে দেখো তাহলে বুঝতে পারবে উদারতা কাকে বলে। উনি হয়তো এযাত্রায় সফল হবেননা ,ওকে হেয় করার জন্য দুর্নীতিপরায়ণ রাজনীতিক আর রাজনৈতিক দল ও ছদ্মবেশী সমাজসেবীরা এককাট্টা হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত উনি সফল হবেন ,অনেক সময় লেগে যাবে কারণ ,কবির ভাষায় ,দিকে দিকে নাগিনীরা ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস। ওনার সাময়িক ব্যর্থতা দেখে হতাশ হয়োনা,তাহলে কিন্তু তোমার আত্মোন্নতি হবে না।
যাক এসব জ্ঞানের কথা,এখন বলো তোমার কী আদৌ ইচ্ছে আছে মন বড় করার ,নাকি যেমন আছ তেমনই থাকতে চাও। যদি নিজেকে বদলাতে না চাও তবে মেয়েকে হারাবে ,ও তোমার সঙ্গে থাকতে পারবেনা ,তোমার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে ,তোমাদের সংকীর্ণতা ওকে গ্রাস করতে পারবেনা। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। তোমার মেয়ে কিন্তু পিঙ্কিদের মতো অসহায় হয়ে থাকবেনা।তোমাদের সংকীর্ণতার পরিবেশে পিঙ্কির মতো মেয়েদের অনেক বড় যে জগত সে নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। তাই তারা অসহায় হয়ে থাকে। প্রতিবাদী হতে পারেনা।প্রতিবাদী হতে গেলেই তসলিমা নাসরিন হতে হয় ,দেশছাড়া হয়ে যেতে হয়। তোমাদের এলাকায় নারীবাদী হওয়া মানে ভয়ংকর বিপদকে আবাহন করা। তোমরা যে বিশ্বের এক তামাশাছন্ন এলাকার বাসিন্দা (চলবে)
নিধুভূষণ দাস
হঠাত তার আবার আমার মেয়ের ব্যাপারে আগ্রহ কেনো ,এই ভেবে আমি একটু শঙ্কিত হলাম। ভাবলাম ,আসল কথা বলবোনা। ওকে বললাম ,অন্নু আমার মেয়ে নয়,একটি কল্পিত চরিত্র মাত্র ,আমার কোনো মেয়ে নেই। ওর মুখে একটা বাঁকা হাসি দেখলাম। বললো , ভাবছো যা বলবে তাই বিশ্বাস করবো ,তাই না ?আমি সব জানি। তোমার মেয়ের বয়স ১৪,সে ক্লাস টেন -এ পড়ে ,সেন্ট যোসেফ স্কুলে। খুব ভালো মেয়ে ,অনেক বড় হবে ,স্কলারশিপ নিয়ে অক্সফোর্ড -এ চলে যাবে পড়াশোনা করতে। তুমি ওকে চিনতেই পারোনি ,সম্ভব-ও নয় তোমার মতো সংকীর্ণ মনের মানুষের পক্ষে।
তার কথা শুনে আমি তো হতভম্ব ! সে এতসব জানলো কী করে ,ভেবে পাচ্ছিনা । অন্নুর কুষ্ঠিতে তো লেখা আছে ও বিদেশে পড়তে যাবে ,বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হবে ,পরে নাসায় বড় গবেষক হবে। আমি উপায়ান্তর না দেখে তার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। বললাম ,ক্ষমা কারো ,আমি বুঝতে পারিনি। আবার হাসলো সে। আমি বললাম ,তুমি তো দেখছি সব জানো ,প্লীজ বলবে আমার আগামী দিনগুলি কেমন যাবে ?ও বললো ,সেটা জানি কিন্তু বলবোনা ,তাতে তোমার ক্ষতি হবে। কি ক্ষতি হবে ? সে বললো ,ভালো বললে তুমি আত্মতুষ্টিতে ভুগবে ,খারাপ বললে হতাশায় আছন্ন হবে। বরং কর্তব্য পালন করে যাও ,তাতেই ফল মিলবে। আসলে তুমি নিজেকেও চিনতে পারোনি এতদিনে। যে নিজেকে চেনেনা ,সে অন্যকে চিনবে কী করে। উদার হওয়ার চেষ্টা করো ,দেখবে অনেক কিছু নিজেই বুঝতে পারবে।
ও মিথ্যে বলেনি এক বিন্দুও।উদারতা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ ,সংকীর্ণতা আমার উত্তরাধিকার। জানতে চাইলাম, কীভাবে উদার হওয়া যায়। ও বললো, চেষ্টা করো,অনুশীলন করো ,উদার মানুষদের অনুকরণ করো ,দেখবে হয়ে যাবে। আমি তো উদার কে তাই জানিনা ,সবাইকে আমার মতোই মনে হয়। আমার এই আত্মোপলব্ধি বুঝতে পেরে সে বললো, নিজেকে বুঝতে পারলেই উদার হতে পারবে। শোনো, তোমাদের ওই দিল্লিতে কে একজন কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ,ওকে দেখো তাহলে বুঝতে পারবে উদারতা কাকে বলে। উনি হয়তো এযাত্রায় সফল হবেননা ,ওকে হেয় করার জন্য দুর্নীতিপরায়ণ রাজনীতিক আর রাজনৈতিক দল ও ছদ্মবেশী সমাজসেবীরা এককাট্টা হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত উনি সফল হবেন ,অনেক সময় লেগে যাবে কারণ ,কবির ভাষায় ,দিকে দিকে নাগিনীরা ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস। ওনার সাময়িক ব্যর্থতা দেখে হতাশ হয়োনা,তাহলে কিন্তু তোমার আত্মোন্নতি হবে না।
যাক এসব জ্ঞানের কথা,এখন বলো তোমার কী আদৌ ইচ্ছে আছে মন বড় করার ,নাকি যেমন আছ তেমনই থাকতে চাও। যদি নিজেকে বদলাতে না চাও তবে মেয়েকে হারাবে ,ও তোমার সঙ্গে থাকতে পারবেনা ,তোমার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে ,তোমাদের সংকীর্ণতা ওকে গ্রাস করতে পারবেনা। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। তোমার মেয়ে কিন্তু পিঙ্কিদের মতো অসহায় হয়ে থাকবেনা।তোমাদের সংকীর্ণতার পরিবেশে পিঙ্কির মতো মেয়েদের অনেক বড় যে জগত সে নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। তাই তারা অসহায় হয়ে থাকে। প্রতিবাদী হতে পারেনা।প্রতিবাদী হতে গেলেই তসলিমা নাসরিন হতে হয় ,দেশছাড়া হয়ে যেতে হয়। তোমাদের এলাকায় নারীবাদী হওয়া মানে ভয়ংকর বিপদকে আবাহন করা। তোমরা যে বিশ্বের এক তামাশাছন্ন এলাকার বাসিন্দা (চলবে)