শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৪

ভূতের গল্প

নিধুভূষণ দাস 

    আমার মেয়ে অন্নু  বায়না করেছে তাকে প্রতিদিন একটা ভূতের গল্প শোনাতে হবে। ভূতের গল্প তো দূরের কথা, আমি গল্পই বলতে পারি না। তাও আমাকে ওর কথায় সায় দিতে হলো। মেয়ে আমার বড় জেদি, রাগি এবং অভিমানি। না বল্লে ঠোট ফুলবে, কথা বন্ধ হবে। এমন পরিস্থিতি তে আমার নিজেরই কান্না পেয়ে যায়। তাই রাজি হলাম, কিন্তু গল্প পাব কোথায় ? নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল আমার। অন্নু কে যে গল্প বলতে হবে, কথা দিয়েছি। ভাবছি তো ভাবছি , গল্পের প্লট খুঁজে পাচ্ছিনা। দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমোতে গেলাম কিন্তু ঘুম এলো না। অনেকক্ষণ গড়াগড়ির পর লেখার টেবিলে গিয়ে বসলাম। কিন্তু গল্প আসলোনা । বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামল , একা বসে আছি পড়ার টেবিলে। সন্ধায় যে বাতি জ্বালাতে  হয় তাও ভুলে গেলাম , সেই এক ভাবনায়। ঘরে আমার সামনে দূরের দেয়াল ঘেঁষে রয়েছে ফার্নিচার। ওই দিকটায় বেশ অন্ধকার। 

   হঠাত দেখি কী ওদিকে একটি ছায়া ভেসে ওঠলো - প্রথমে হাথ তারপর স্লিভ্স , ঠ্যাং , পা এবং স্কার্ট। আমি তো ভয়ে জড়োসড় । আমি শুধু  ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর দেখলাম ছায়াটি এক লাফে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। ভাবতো তখন আমার কী ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। শিঁরদারা শীতল হয়ে গেল। ছায়াটি আমার দিকে কটমট তাকিয়ে থাকলো , পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখল। আমি ভয়ে বোবা হয়ে গেলাম। কাউকে ডাকব সেই অবস্থা নেই। 

   এমন সময় সে আমাকে বললো 'তুই আমাকে ডাকলি কেন ?' আমার তো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা। তোতলাতে তোতলাতে বললাম , 'না তো, আমি ডাকি নি তো।' সে বলল, 'কেন তুই গল্পের প্লটের জন্য সারাক্ষণ ভগবান ভগবান বলে ডাকছিলি না ? তাই তো এলাম।' শুনে আমি থ। ও জানলো কী করে আমার মনের কথা। (চলবে)



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন